ভ্রমনের সময়কালঃ
সুউচ্চ পাহাড়, সুন্দর সুন্দর ঝরনা, পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথ, খাসিয়াদের জীবনব্যবস্থা সর্বোপরি মেঘেদের অপরূপ খেলা দেখতে প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক ছুটে আসে এই রাজ্যটিতে। মেঘালয়ে সারা বছর পর্যটকদের আগমন ঘটে তবে সেখানে পিক সিজন এবং অফ পিক সিজন বলে কথা আছে। পিক সিজন হলো মার্চ মাস থেকে জুলাইয়ের মাঝামাঝি এবং সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের মাঝামাঝি। এ সময় প্রচুর পর্যটক এখানে বেড়াতে আসেন, তাই সবকিছুর দাম বেশি থাকে। যেমন ভ্রমণ খরচ, হোটেল ভাড়া, খাবার খরচ এ সময় অন্য সময়ের চেয়ে বেশি।
কোথায় থাকবেনঃ
শিলং পাহাড়ি শহর। শিলংয়ের বড়বাজার ও পুলিশবাজার পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় দুটি এলাকা। কারণ পর্যটকদের থাকার হোটেলগুলোর অধিকাংশই বড়বাজার ও পুলিশবাজার কিংবা তার আশপাশে অবস্থিত। তবে পুলিশবাজার তাদের কাছে বেশি জনপ্রিয়, কারণ এখান থেকে থেকে সহজেই বিভিন্ন টুরিস্ট স্পটগুলোতে যাওয়ার গাড়িগুলো ছেড়ে যায়। শিলংয়ের হোটেলগুলোতে আপনি দিনপ্রতি ৮০০ রুপি থেকে ১০ হাজার রুপির মধ্যে রুম পাবেন। শিলংয়ের হোটেলগুলোর মধ্যে অন্যতম হোটেলগুলো হলো ইডেন রেসিডেন্সি, হোটেল ব্রডওয়ে শিলং, হোটেল আলপিন কন্টিনেন্টাল, দ্য মাজেস্তিক হোটেল, হোটেল এসেম্বলি, হাই উইন্ডসহ অসংখ্য থাকার হোটেল এখানে আছে। অনলাইনের মাধ্যমেও রুম বুকিং দেওয়ার ব্যবস্থাও আছে এই হোটেলগুলোতে।

খাবারের স্থানঃ
শিলংয়ে বেশ ভালো কিছু খাবারের হোটেল রয়েছে। এ হোটেলগুলোতে মাছ, মাংস, লুচিসহ নানা দেশীয় এবং চায়নিজ খাবার পাওয়া যায়। তবে যাঁরা হালাল-হারাম চিন্তা করে খাবার খেয়ে থাকেন, তাঁরা একটু যাচাই বাছাই করে খাবেন। কারণ খাসিয়াদের অন্যতম প্রিয় খাবার হচ্ছে শূকরের মাংস। তবে শিলংয়ের কিছু খাবার খুব জনপ্রিয়, যার স্বাদ আপনিও গ্রহণ করতে পারেন যেমন পুলিশ বাজারের দিল্লি মিষ্টান্নভাণ্ডারের জিলাপি, ইসি রেস্তোরাঁর কিমা সমুচা। এ ছাড়া এখানকার রেস্তোরাঁগুলোর চাউমিন বেশ প্রশংসিত। এখানে ঘুরতে এসে টুরিস্টরা আরো সেসব খাবারের প্রশংসা করেন তা হলো খাসিয়াদের ঐতিহ্যবাহী কিছু খাবার, আনারস এবং নানা পসরায় সাজানো পান।
দর্শনীয় স্থানগুলোতে যেভাবে যাবেনঃ
পুলিশবাজার মোড় থেকে আপনি এই স্থানগুলোতে যাওয়ার বিভিন্ন গাড়ি পাবেন। এ ছাড়া এখানকার ট্যুরিজম সম্পর্কিত সকল তথ্যের জন্য আপনি মেঘালয় ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট করপোরেশনে যোগাযোগ করতে পারেন। এখান থেকে প্রতিদিন বাসে করে কম খরচে পর্যটকদের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরিয়ে দেখানো হয়। তবে এর জন্য আপনাকে আগে থেকে টিকেট কেটে রাখতে হবে। এ ছাড়া আপনার সুবিধার জন্য সঙ্গে একজন টুরিস্ট গাইড রাখতে পারেন।
সঙ্গে যা যা রাখবেনঃ
একজন টুরিস্ট হিসেবে আপনার প্রথমেই যা সব সয়য় সঙ্গে রাখা উচিত তা হলো আপনার পাসপোর্ট ও ভিসা। কারণ পুলিশ যেকোনো সময় আপনার পাসপোর্ট ভিসা দেখতে চাইতে পারে। এ ছাড়া যেহেতু মেঘের রাজ্য, সুতরাং ভিজতে না চাইলে অবশ্যই কিছু সরঞ্জাম যেমন ছাতা, রেইন কোর্ট, মোবাইল ভেজা থেকে রক্ষা করতে পলিথিন ব্যাগ ইত্যাদি সঙ্গে রাখুন। পাহাড়ি রাস্তায় হাঁটার জন্য স্লিপার স্যান্ডেল বেশ আরামদায়ক। কিছু মানুষ আছে যাদের উঁচুতে উঠলে মাথাব্যথা হয়, তারা সঙ্গে মাথাব্যথার ট্যাবলেট রাখতে পারেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি আপনার খেয়াল রাখতে হবে তা হলো সঙ্গে পানি নিয়েছেন কি না।
সাবধানতাঃ
১। মেঘালয়ের স্থানীয় অধিবাসীরা পর্যটকদের প্রতি খুবই আন্তরিক কিন্তু কোনোভাবেই তাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় যাবেন না, এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।
২। যাঁরা হালাল-হারাম চিন্তা করে খাবার খেয়ে থাকেন, তাঁরা একটু দেখেশুনে খাবার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে খাবার খাবেন।
৩। সকাল সকাল ঘুরতে বের হয়ে সন্ধ্যা হওয়ার আগেই ফিরে আসুন।
৪। সঙ্গে মোবাইল, ক্যামেরা ইত্যাদি থাকলে সেগুলো সাবধানে রাখুন।
তথ্যঃ কালেক্টেড
মেঘের রাজ্য মেঘালয়
Reviewed by BANGLA TRAVEL
on
21:17
Rating:

No comments: