হারিয়ে যাওয়া পিঠা চুঙ্গাপিঠা - Bangla Travel

হারিয়ে যাওয়া পিঠা চুঙ্গাপিঠা

ঢলু বাঁশের লম্বা সরু চোঙ্গায় বিন্নি চাল। সঙ্গে দুধ, চিনি, নারকেল, চালের গুঁড়া। নাড়ার আগুনে বাঁশের ভেতর সেদ্ধ হয়ে তৈরি হলো লম্বাটে সাদা পিঠা। চোঙ্গার ভেতরে তৈরি বলে এর নাম চুঙ্গি। বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে এক সময় শীত মৌসুমে ভাপা, পুলি আর মালপো পিঠার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উৎসব মাতালেও এই পিঠার এখন দেখা পাওয়াই দুষ্কর।

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) ঘুরে:
ঢলু বাঁশের লম্বা সরু চোঙ্গায় বিন্নি চাল। সঙ্গে দুধ, চিনি, নারকেল, চালের গুঁড়া। নাড়ার আগুনে বাঁশের ভেতর সেদ্ধ হয়ে তৈরি হলো লম্বাটে সাদা পিঠা। চোঙ্গার ভেতরে তৈরি বলে এর নাম চুঙ্গি। বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে এক সময় শীত মৌসুমে ভাপা, পুলি আর মালপো পিঠার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উৎসব মাতালেও এই পিঠার এখন দেখা পাওয়াই দুষ্কর। এক সময় বাড়িতে জামাই এলে এই চুঙ্গা পিঠার সঙ্গে হালকা মসলায় ভাজা মাছ বিরাণ ও নারিকেল ও কুমড়ার মিঠা বা রিসা পরিবেশন না করতে পারলে যেনো লজ্জায় মাথা কাটা যেতো গৃহকর্তার। কুয়াশা মোড়া রাতে রাতভর চলতো চুঙ্গাপুড়া তৈরি। গিট্টু মেপে ছোট ছোট করে কাটা বাঁশের ওপর জ্বলতো খড়ের আগুন।


 সব মিলিয়ে এ পিঠা তৈরির আবহটাই তৈরি করে দিতো উৎসবের আবহ। কিন্তু ঐতিহ্যবাহী এই পিঠা বানাতে ঢলু নামে যে বিশেষ প্রজাতির বাঁশ দরকার হয় তা বিলুপ্ত হতে বসায় চুঙ্গাপুড়ারও আকাল চলছে এখন। নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন আর পাহাড় উজাড়ের কারণে ঢল‍ু বাঁশ এখন সহজে পাওয়াই মুশকিল। এমনকি, মৌলভীবাজারের বড়লেখার এই পিঠা তৈরির সুনাম থাকলেও ঢলু বাঁশের আকাল এখন সেখানেও।
শীতকালে তবু কালেভদ্রে দেখা মেলে ঢলু বাঁশের। বিশেষ ধরনের রাসায়নিক থাকে বলে এই বাঁশ আগুনে পোড়ে না মোটেও। ক্রমাগত তৈলাক্ত তরল নি:সরণ করে টিকে ঢাকে সরু বাঁশের সবুজ শরীর। এমনকি কয়েক ঘণ্টা আগুনে পোড়ার পরও সবুজই থাকে ঢলু বাঁশ। কিন্তু আগুনের ভাপে চোঙ্গার ভেতরে ঠিকই তৈরি হয়ে যায় চুঙ্গাপুড়া।
এক সময় পাহাড়ি আদিবাসিদেরই খাবার ছিলো এই চুঙ্গা পিঠা। কালক্রমে তা সমতলের মানুষের উৎসবে অন্যতম অনুসঙ্গ হয়ে ওঠে। চাল ভিজিয়ে নরম করে বাঁশের চোঙ্গায় সেঁধিয়ে পিঠা তৈরি করতে শিখে যায় সব জাতি-ধর্মের মানুষ।

দুধের মালাই বা খেজুরের গুঁড় দিয়ে খেতে দারুণ স্বাদ চুঙ্গাপুড়ার। বড় বড় রুই-কাতলা, বোয়াল, চিতল, পাবদা, কই, মাগুর মাছ হালকা মসলায় ভেজে তৈরি মাছের বিরাণে চুঙ্গা পিঠা খেতে তো আরো মজা।

সেদ্ধ হওয়ার পর যে কোনো দিকে টান দিলেই ছিলকা খুব সহজেই উঠে যায় ঢলু বাঁশের।  কয়েক ঘণ্টা পোড়ানোর পরও যেনো কাঁচাই থাকে বাঁশটা। আর ভাপে সেদ্ধ হয়ে ভেতরের বিন্নি চাল তখন রূপ নিয়ে নেয় মোটা মোমবাতির।
কিন্তু ঢলু বাঁশের মতো বিন্নি ধানও এখন চাষ হচ্ছে কম। তাই কদাচিৎ পাওয়া গেলেও চড়া দামে কিনতে হয় চুঙ্গাপিঠা তৈরির প্রধান দুই উপকরণ। সিলেটের এতিহ্যবাহী এই পিঠা তাই হারিয়েই যেতে বসেছে।

ঘুরতে যাবার আগে জেনে নিন কিভাবে সাজাবেন আপনার ভ্রমণ পরিকল্পনা ?

আমরা বিভিন্ন পর্যটনস্থান নির্বাচন করে ভ্রমনে যাই। ভ্রমনে যাওয়ার পর অনেক সময় মনে হয়- ‘‘ইশশ শুক্রবারে না আসলে ভালো হতো’’ বা ‘‘শীতে আসলে মজা হতো’’। বা ‘‘সকাল সকাল এসে পৌছলে দারুন হতো’’। কিন্তু যখন এমন আফসোস করি তখন আসলে কিছু করার থাকেনা। ‍তাই আসুন আজ জেনে নিই ভ্রমণে বেরিয়ে পড়ার পূর্বে কিভাবে আপনার ভ্রমণ পরিকল্পনাটা সাজিয়ে ফেলবেন ।
 আগেই সবকিছু ঠিক করে রাখাঃ  
এটা একটা সাধারণ ব্যাপার যে কোনো কাজে বা সফরে যাওয়ার আগেই সবকিছু ঠিকঠাক করে নিতে হবে। কারণ কখনোই সবকিছু আমার আপনার জন্য সব জায়গায় তৈরী হয়ে থাকবে এমনটা ভাববার কোনো অবকাশ নেই। তাই আগে থেকেই কোথায় থাকবেন, কি খাবেন,যানবাহন, গাইড এগুলো ঠিক করে যেতে পারলে ভালো। বিশেষ করে পাহাড়ী বা দূরের জায়গায় কখনোই এসব ঠিক না করে হুট করে চলে যাওয়াটা বোকামী।
সময় হাতে নিয়ে বের হওয়াঃ
আমরা অনেক সময় ঘর থেকে বের হই কাঁটায় কাঁটায় সময় নিয়ে। ধরে রাখি যে ঢাকা থেকে ৭ ঘন্টায় বান্দরবান পৌঁছে যেতে পারবো। আসলে বাস্তবে এমনটা নাও হতে পারে। রাস্তায় নানা সমস্যা হতে পারে যানযটতো রয়েছেই। তাই হাতে সময় রেখে বের হওয়া ভালো।
কোনটি আগে কোনটি পরেঃ
আপনি একটা এলাকায় ঘুরতে গেলেন। সেখানে গিয়ে এক এক করে পিকনিক স্পট দেখতে লাগলেন। দেখা গেল এভাবে দেখার পর যেটা মূল আকর্ষণ সেটা আর দেখতে পেলেন না। কারণ সেখানে বিকেল ৫টায় পর প্রবেশ নিষেধ। তাই আগেই এসবের খোঁজ খবর নিয়ে রাখবেন। যাতে আপনি সহজে সিন্ধান্ত নিতে পারেন কোনটি আগে আর কোনটি পরে তা আগে থেকেই ঠিক করে রাখবেন  অথবা কোথায় দিনের আলোতে ঘুরতে যাবেন আর কোথায় রাতে বেড়াতে গেলে ভাল লাগবে ।
আসার পথে নাকি যাওয়ার পথেঃ
আমরা যেসব ট্যুর এলাকায় যাই তার আসা যাওয়ার পথে অনেক ছোট বড়ো ট্যুর স্পট থাকে। আমরা অনেক সময় এক ঢিলে দুই পাখি মারতে গিয়ে সেগুলোও দেখার কথা ভাবি কিন্তু সেজন্য বাড়তি সময় বরাদ্দ করিনা। ফলে পুরো সফরটা প্লান মতো হয়না। এজন্য আসা যাওয়ার পথে কোথায় আগে যাবো আর কোথায় পরে যাবে এগুলো ঠিক করে নিতে হবে। এবং কোথায় কতসময় থাকবো তাও আাগে থেকে দলের সবাইকে বলে দিতে হবে।
 কোথায় থাকবেন? কোথায় খাবেন? ঃ
সফরে বের হলে দুই ধরনের থাকার জায়গা থাকে প্রথমত আরামদায়ক ও বিলাসবুহল দ্বিতীয়ত সাধারণ বা এডভেঞ্চারাস। কোনো এলাকায় দুই ধরনের ব্যবস্থ্যাই থাকে। সেক্ষেত্রে আপনাকে দেখতে হবে আপনি কোনটাতে স্বাচ্ছন্দবোধ করেন সে ধরনের থাকার জায়গা চাই। তবে পাহাড়ে বা বনে গেলে মাথায় রাখা উচিত যতটা সম্ভব প্রকৃতির কাছাকাছির থাকার ব্যাপারটা তবে যদি ধাতে সয়। ভয় কিংবা শুচিবায়ু থাকলে তখন আবার অন্যরকম ভাবতে হবে।
খাওয়ার ব্যাপারে যারা ঘুরবাজ তারা কিন্তু সব সময় স্থানীয় খাবারকে গুরুত্ব দেন। এটা ভালো ব্যাপার। তবে এর পাশাপাশি স্বাস্থ্যের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। এছাড়া আরো কিছু ব্যাপার থাকে। ধরুন আপনি সাজেকে একটা উপজাতি পরিবারের সাথে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। ‍আপনি মুসলিম হিসেবে হালাল হারাম স্পর্শকাতরতা যদি মেনে চলেন। তখন আপনার উচিত হবে সে পরিবারকে বলে রাখা যে মুরগী বা খাসি যাই জবাই করে সেটা যেন আপনাদের কা্উকে দিয়ে জবাই করে নেয়। কারণ পরে আপনার দলের একজন যদি বেঁকে বসে তাহলে পুরো ব্যাপারটা ঘোলাটে হয়ে যেতে পারে।
ছবি তোলা ও কেনা কাটাঃ
আমাদের ভ্রমণের গুরুত্বপূর্ণ দুটি অংশ হলো ছবিতোলা ও কেনাকাটা। ছবি তোলার সময় আমরা সফরে কিছু ভুল করে থাকি। অনেক সময় শুধু নিজের ছবি তুলি পর্যটন স্থানের আলাদা ছবি তুলি না। আবার কখনো ঠিক তার উল্টোটা করি। কেউ কেউ আবার এমনভাবে ছবি তোলেন নিজেকে ফোকাস করতে গিয়ে প্রকৃতি বাদ পড়ে যায়। আবার কেউ প্রকৃতিকে ফোকাস করতে গিয়ে ফ্রেমের মধ্যে নিজেকে হারিয়ে ফেলেন। আপনি অবশ্যই দুই ধরনের ছবিই তুলতে পারেন। তবে আপনি যদি নিজেকে মাঝখানে না রেখে বা যার ছবি তুলছেন তাকে মাঝখানে না রেখে একপাশে রেখে ছবি তুলেন তাহলে আপনি দুই দিকই রাখতে পারেন। বর্তমানে অনেকে সেলফি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। একটা কথা  ভুলে গেলে চলবেনা। ছবি তোলার জন্য একহাজার এঙ্গেল থাকে তাহলে সেলপি তার মধ্যে একটা মাত্র। আপনার সেলফি তুলেতে মন চাইলে তুলবেন কিন্তু সেজন্য ছবি তোলার স্বাভাবিকতাটা হারিয়ে ফেলবেন না।
কেনাকাটার ক্ষেত্রে কোথায় কি পাওয়া যায় আগেই খবর নিয়ে রাখবেন। পারলে দাম সম্পর্কেও্ জেনে রাখবেন। আর বিদেশী পন্য বা আপনার শহরে যা পাওয়া যায় তাই পর্যটন শহর থেকে কেনার কোনো মানে নেই। আপনি কিনবেন স্যুভেনির। স্যুভেনির হলো সে এলাকার স্থানীয় পন্য যা অন্যত্র চাইলেই পাওয়া যায়না তাই। সে ধরনের পন্যই কিনবেন। সেটা নিজের জন্য কিনতে পারেন, পরিবারের জন্য চাইলে গিফট করার জন্যও কিনতে পারেন।
দূরে বা রিমোট এলাকায় আরো নানা রকম সমস্যা হয় বা হতে পারে। সেসব টেনশান থেকে সেইফ থাকতে দলবল নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন। অথবা কোনো তৃতীয়পক্ষের কাছ থেকে সাহায্তা নিতে পারেন। অনেকে মনে করেন ট্যূর অপারেটর কোম্পানীর কাছ থেকে ভ্রমণসেবা নিলে খরচ বেশী পড়ে যায়। তাই নিজেরাই সবকিছু করতে যান তখন নানারকম বিপদে পড়েন। তাই আপনার খুব ভালো জানাশোনা না থাকলে এরকম না করাই ভালো। তাছাড়া দলে ভ্রমণ করলে খরচ কমই হয়।
হারিয়ে যাওয়া পিঠা চুঙ্গাপিঠা হারিয়ে যাওয়া পিঠা চুঙ্গাপিঠা Reviewed by BANGLA TRAVEL on 20:23 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.