সেন্টমার্টিনের প্রায় ৪০টি হোটেল ভেঙ্গে ফেলা হবে ! - Bangla Travel

সেন্টমার্টিনের প্রায় ৪০টি হোটেল ভেঙ্গে ফেলা হবে !

আগামী ২০ মে-এর মধ্যে হোটেল কর্তৃপক্ষকে নিজ দায়িত্বে হোটেল সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। সেন্টমার্টিনে অবৈধভাবে নির্মিত ৩৮টি আবাসিক হোটেল ভাঙ্গার নির্দেশ দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সরদার শরীফুল ইসলাম বলেন, সেন্টমার্টিনে অবৈধভাবে নির্মিত ১০৪টি আবাসিক হোটেলের তালিকা করা হয়েছে। এর মধ্যে গত বুধবার তিন তলা, দোতলা ও এক তলার ৩৮টি আবাসিক হোটল ভাঙ্গার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ২০ মে এর মধ্যে নিজ দায়িত্বে এসব হোটল সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে।

তিনি জানান, নির্ধারিত তারিখের মধ্যে হোটেল সরিয়ে নিতে ব্যর্থ হলে হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হোটেলগুলো ভেঙ্গে দেবে প্রশাসন।
ভাঙ্গার নোটিশ পাওয়া হোটেলগুলোর মধ্যে রয়েছে- ব্রু মেরিন, ফ্যান্টাসি, অবকাশ পর্যটন লিমিটেড, লাবিবা বিলাস, সেন্ডশোর, প্রসাদ প্যারাডাইস, প্রিন্স হেভেন, সপ্ন বিলাস, সেভেন স্টার, ব্লু-সি ইস্টান রির্সোট, সি ইন, ডাক বাংলা, ঔশান ব্লু, সি ভিউ, সি প্রবাল, সি টি বি ও এস কে ডিস ইত্যাদি।
সম্প্রতি দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে সেন্টমার্টিন নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছিল। এতে বলা হয়েছিল, আদালতের নিষেধ থাকা সত্ত্বেও সেন্টমার্টিনে ১০৬টি হোটেল-মোটেলসহ নানা স্থাপনা গড়ে উঠেছে। এছাড়া অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন সেন্টমার্টিনের সৌন্দর্য, পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
এর ভিত্তিতে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২১ মার্চ ৪ সচিবসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে রুল রুল জারি করে বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারতি আশীষ রঞ্জন দাসের হাইকোর্ট
বেঞ্চ। তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়েছিল রুলে।
জাতীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পরই সেন্টমার্টিনের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষার উদ্যোগ নেয় সরকার। সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে তদন্ত কমিটি গঠনসহ নানা সুপারিশ করা হয়। টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে ঝুঁকিপূর্ণ নৌপথের বিষয়টি তদন্তে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের কমিটি গঠন, নৌপথে অত্যাধুনিক বাতি বয়া বসানোর উদ্যোগ ও অবৈধ স্থাপনার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকের নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া সেন্টমার্টিনে তিন বছরের জন্য সাময়িকভাবে পর্যটন বন্ধ করে দ্বীপটি পুনর্গঠনের সুপারিশ করে পরিবেশ অধিদপ্তর।
হোটেল ব্লু মেরিনের পরিচালক মনসুর আহমেদ বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি নোটিশের কথা শুনেছি। তবে এ বিষয়ে হোটেলের ঢাকা অফিসের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।
হোটেল সি ইন এর মালিক রেজাউর রহমান স্বপন বলেন, অন্যান্য হোটেল কর্তৃপক্ষ যদি তাদের হোটেল ভাঙ্গে তবে আমারও ভাঙবো।
পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সরদার শরীফুল ইসলাম বলেন, জনবল খুব কম হওয়ায় আমরা সেন্টমার্টিনে সময় দিতে পারে না। এখন সেন্টমার্টিন নিয়ে পরিকল্পনা করছে সরকার; যা অতি দ্রুত বাস্তবায়ন হবে।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিজ দায়িত্বে যে হোটেলগুলো ভাঙ্গা হবে না- হোটেলগুলোর বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে মামলা করে সেগুলো ভেঙ্গে দেওয়া হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের উদ্যোগে সন্তোষ প্রকাশ করে কক্সবাজারের পরিবেশ বিষয়ক সংস্থা ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটির (ইয়েস) প্রধান নির্বাহী এম. ইব্রাহিম খলিল মামুন বলেন, সেন্টমার্টিন নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। ওই দ্বীপ রক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রশাসনের কঠোর নজরদারিতে অবৈধভাবে নির্মিত ৩৮টি আবাসিক হোটেল ভাঙ্গার নির্দেশ বাস্তবায়ন সম্ভব।
সেন্টমার্টিনের প্রায় ৪০টি হোটেল ভেঙ্গে ফেলা হবে ! সেন্টমার্টিনের প্রায় ৪০টি হোটেল ভেঙ্গে ফেলা হবে ! Reviewed by BANGLA TRAVEL on 10:59 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.